বয়লার মুরগির পরিবর্তে আসছে দেশি বয়লার (এমসিটিসি) মুরগি


স্টাফ রিপোর্টার : দেশের মোট মাংসের চাহিদার শতকরা ৪০-৪৫ শতাংশ আসে পোল্ট্রি থেকে। যার অর্ধেকের বেশি আসে বাণিজ্যিক ব্রয়লার থেকে এবং এর জাত পুরোটাই আমদানি নির্ভর। ফলে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু উপযোগী জাতের সংকট পোল্ট্রি খাতে রয়েই গেছে। সাথে স্বাদের বিষয়টিতো রয়েছেই। আর এই বাস্তবতা মাথাই রেখেই বছর দু’এক আগে একটি অধিক মাংস উৎপাদনকারী মুরগির জাত উদ্ভাবন করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)-এর পোল্ট্রি উৎপাদন গবেষণা বিভাগের বিজ্ঞানীরা।
দেশীয় জার্মপ্লাজম ব্যবহার করে ধারাবাহিক সিলেকশন ও ব্রিডিং এর মাধ্যমে দেশীয় পরিবর্তনশীল আবহাওয়া উপযোগী মুরগির এই জাতটির নামকরণ করা হয় “মাল্টি কালার টেবিল চিকেন (এমসিটিসি)। নতুন এ জাতের এ মুরগিগুলো মিশ্র রং এর হওয়ায় এই নামকরণ করা হয়।
বিএলআরআইয়ের গবেষণা খামারে এ নতুন জাত নিয়ে প্রায় দশ বছর ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে গবেষণা চলছে। বর্তমানে এ মুরগির উৎপাদন দক্ষতা, বয়সভেদে পুষ্টির চাহিদা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, ভ্যাকসিন তালিকা প্রণয়ন, লাভ-ক্ষতির অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ, মাংসের গুণাগুণ ও ভোক্তা পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা যাচাইসহ লালন-পালনের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিষয়ের ওপর গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছেন তারা।
সাধারণত, মুরগি পালনে মোট ব্যয়ের শতকরা ৬০-৭০ ভাগই খরচ হয় খাদ্য বাবদ। তাই,  খাদ্য অপচয় রোধে নেওয়া উচিত সর্বোচ্চ ব্যবস্থা। এমসিটিসি জাতের মুরগি পালনে জায়গার পরিমাণ, ব্রিডিং তাপমাত্রা, আলো ও বায়ু ব্যবস্থাপনা অনান্য মুরগির মতই ঘরের ভেতরের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৪৫-৬৫% এর মধ্যে রেখে  মুরগির ঘরে বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। 
বিএলআরআই এর মতে, এমসিটিসি জাতের মুরগি গুলোর মৃত্যুর হার খুবই কম। তারা জানায় তাদের পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় সর্বোচ্চ ১.৫% মৃত্যুহার পাওয়া গেছে। এই জাতের মুরগিগুলো অধিক রোগ প্রতিরোধক্ষম এবং দেশীয় আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় সঠিক বায়োসিকিউরিটি বা জীব-নিরাপত্তা এবং প্রতিপালন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে রোগ-বালাই থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকতে পারে ।
বিএলআরআই-এ পরিচালিত গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, এমসিটিসি জাতের মুরগি থেকে বছরে অন্তত  ১ লক্ষ ৮০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এছাড়াও, এমসিটিসি জাতের মুরগিগুলো মাংসের স্বাদ ও পালকের রং দেশি মুরগির ন্যায় মিশ্র বর্ণের হওয়ায় খামারীগণ বাজার মূল্যও প্রচলিত সোনালী বা অন্যান্য ককরেল মুরগির তুলনায় বেশি পাবেন বলে আশা করেন বিএলআরআই-এর বিজ্ঞানীরা।

Comments

Popular posts from this blog

ঈদে কেনাকাটা না করে গরিব অসহায় কর্মহীন মানুষকে অর্থ দান করুন: ওবায়দুল কাদের

ভ্যাকসিন ট্রায়ালের উদ্যোগ নিল বাংলাদেশ

ত্রাণ বিতরণ কে কেন্দ্র করে মেয়রের ওপর ছাত্রলীগের হামলা